রহস্যে ঘেরা রথওয়েল গীর্জা
জামশেদ রনি
গীর্জার কথা ভাবলে আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে স্তম্ভ, সারি সারি আসন, ম্যুরাল, মূর্তি এবং ধর্মীয় অনেক কল্পিত প্রতিমূর্তি । ইংল্যান্ডের শান্ত শহর রথওয়েল। সেখানে মধ্যযুগের একটি গীর্জায় মাটির নিচে হাজার হাজার প্রাচীন হাড় পাওয়া গেছে। যাদের কারো ভাগ্যে সমাধির মর্যাদা জোটেনি। তাই এ গির্জাটি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ও রহস্যজনক অসমাধিস্থল হিসেবে পরিচিত। যার রহস্য আজও উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। রথওয়েল সাত হাজার পাঁচশো বছরের পুরনো একটি শহর। এটি নর্দাম্পটনশায়ারের কেটেরিং জেলায় অবস্থিত। সেকালে শহরটি বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত ছিল। আঠারো শতকে শহরটি বোনা কাপড়, সিল্ক, পশমী সুতা উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত ছিল। এ শহরটির কিছু ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। দেশের সবচেয়ে বড় ট্রিনিটি গীর্জা এখানে অবস্থিত। এটি বিখ্যাত হওয়ার কারণ হল, সেখানে ভবনের গভীরে সাতশো বছরের পুরনো সমাধিগৃহের হাড় পাওয়া গেছে। হাড়ের পরিমাণ পনেরশো।
অনেকের ধারণা, যুদ্ধে নিহত সৈনিকের হাড় হতে পারে এগুলো। আবার কেউ কেউ মনে করছে, ১৫৮০ সালে পার্শ্ববর্তী সমাধীসৌধ থেকে সেখানে একটি হাসপাতাল তৈরি করার জন্য হাড়গুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, সমাধিটি সেই এলাকার লোকেরা তাদের পূর্ব পুরুষদের প্রার্থনার তীর্থযাত্রা হিসেবে ব্যবহার করতো।
বলা হয়ে থাকে, ইংল্যান্ডে বিদ্যমান দুটি অক্ষত হাড়ের অস্তিত্ব ট্রিনিটি গীর্জায় এখনও আছে। সেখানে পাওয়া বেশিরভাগ হাড় পায়ের এবং মাথার খুলির। বিজ্ঞানীদের প্রশ্ন, মানুষের শরীরে থাকা বাকি হাড়গুলো কোথায় গেল তাহলে? এই রহস্যের জট এখনও কেউ খুলতে পারেনি। শত শত বছর ধরে রথওয়েলের এই হাড়গুলো রহস্য হিসেবে রয়ে গেছে।
কি ঘটেছিল সেখানে?কেন এগুলো সেখানে, কোথা থেকেই বা এলো?তিনশো বছর পূর্বে বিজ্ঞানীরা এর রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করেন। কিন্ত রথওয়েলের হাড়ের এই সমাধিগুলোর রহস্যের সমাধান আজও হয়নি। গীর্জাটি সবার জন্য উন্মুক্ত। অনেক পুরনো খুলি এবং হাড় সেখানে আছে। আপনার যদি কৌতূহল এবং স্নায়ু শক্তিশালী থাকে তবে হাজার বছর আগে কি ঘটেছে তা স্বচোখে দেখে আসতে পারেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/জেডআর